বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট...


রিজার্ভ কিভাবে কমেছে এবং পুনরায় বাড়ছে কিভাবে...!?

দ্রব্যমূল্যের দাম কেনো বৃদ্ধি করা হয়েছে...!?

অন্যান্য খাতের অবস্থা নাজেহাল হওয়ার কারণই বা কি...!?


✍️ মোহাম্মদ সামির ছিদ্দিকী 

      Mohammad Samir Siddique



রিজার্ভ ফান্ড হচ্ছে প্রত্যেকটা দেশের চাহিদার যোগান পূরণের একটা মৌলিক এবং প্রধান বিষয়...!

পৃথিবীর মোট ১৯৫ টা দেশের প্রত্যেকটারই রাষ্ট্রীয় কোষাগার থাকে। এবং রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণে যারা থাকেন মানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত যারা থাকেন তারা রাষ্ট্রের মূল সম্পদ জনগণের চাহিদা এবং রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নের নিমিত্তে এই রিজার্ভ ফান্ড ব্যবহার করে থাকেন এবং নিয়ন্ত্রণ করেন। যেমন আমাদের বাংলাদেশীদের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার অন্যতম খাদ্য যার যোগান দেয়া বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। ক্রমাগত জনসংখ্যা বাড়ছে। যার কারণে কৃষিজ চাষাবাদের জায়গা আবাসস্থলে পরিণত হচ্ছে। উৎপাদন ক্রমাগত কমছে কাজেই খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য আমাদের অন্য দেশের ওপর নির্ভর করতে হয় এই যেমন ইউক্রেন থেকে বিশাল একটা অংশের খাদ্য চাহিদার যোগান আসে বাংলাদেশে। তা কিনে আনতে হয় কারেন্সি ট্রান্সফার করে। ১ ট্রিলিয়ন কাগজের বাংলাদেশী টাকা দিলেও লাভ নাই কারণ এই লেনদেন আন্তর্জাতিক কারেন্সির ওপর নির্ভর করে যা ডলারে পরিমাপ করা হয়। এই যেমন রাশিয়ার সাথে আমেরিকার প্রচন্ড বিরোধ চলছে তাও ড্রোন কেনার সময় রাশিয়া ইউএস ডলারই গুনে দিয়েছে। এই রিজার্ভ ডলার কালেক্টিংয়ের কিছু উৎস থাকে প্রতিটা দেশেই। বাংলাদেশ টেক্সটাইল সেক্টর থেকে ভালোই একটা ফান্ডিং করে আসছিলো এতোকাল যাবৎ যা এখন রসাতলে গেছে। এখন প্রধান উৎস স্রেফ প্রভাসীরা। তারা বাইরে কাজ করবে টাকা পাবে সেই টাকা ঘরের খরচের জন্য পাঠাবে সেই পাঠানো টাকার একটা অংশ মানে রেমিট্যান্স রিজার্ভে জমা হবে। যারা বিদেশে কাজ করেন তারা সেই দেশের কারেন্সিতেই বেতন পান এবং সেই কারেন্সি ইউএস ডলারে কনভার্ট হয়ে দেশের সেন্ট্রাল ব্যাংক হয়ে নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে আসে।


বিগত বেশ কয়েকবছর ধরে আমাদের দেশের বর্তমান সরকার দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকেই বেশি ঝুকে গেছে বাকিসব কিছুর চেয়ে। বাকিসব খাত একেবারেই বাদ। আমি নিজেই টেক্সটাইল সেক্টরে কর্মরত একজন কর্মজীবী। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান এবং অন্যতম একটা উৎস এই টেক্সটাইল এখন অনেক ধরাশায়ী অবস্থায়। এতে অনেক প্রোডাকশন হাউজে তালাও ঝুলে গেছে দীর্ঘদিন ধরে অতিশীঘ্রই আমাদেরটাতেও ঝুলবে আশা করছি...!


এখন কথা হচ্ছে বাসা থেকে বের হলেই প্রতি এক হাত পরপরই দেখি উন্নয়নের জোয়ারের ব্যানার পোস্টারে ভরপুর হাল-হালত। তাহলে মানুষজন যেখানেই যাই দেখি বলে কষ্টে কোনভাবে বেঁচে আছে। অনন্য সুন্দর টানেল তৈরি করেছে। ফ্লাইওভারে ভরপুর হয়ে গেছে গোটা দেশ এটলিস্ট শীতল ছায়াটা পাওয়া যাচ্ছে হেঁটে যেতে যা আগে সম্ভব ছিলো নাহ্। তারপর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা কার্যক্রমও হাতে নিয়ে শুরুও করে দিয়েছে অলরেডি। ওহ্ আচ্ছা স্যাটেলাইটও তো উৎক্ষেপণ করে দিয়েছি আমরা মহাকাশে। আর কি লাগে ভাই...!?


তাও এই আমাদের না-শোকর জাতি বলেই যাচ্ছি কষ্টে আছি...!


নিজের টাকায় নিজের সেতু স্বপ্নের পদ্মাসেতু নির্মাণ...! চাট্টিখানি কথা না ভাইয়া এটা...!

এক টাকা দুই টাকাও নাহ্ ৩০ টা হাজার কোটি টাকা কাগজে কলমে পকেটেরগুলো বাদ দিলাম। গোটা বাংলাদেশের স্বপ্নের পদ্মাসেতু নির্মাণ হয়ে গেছে কিন্তু আমার মালিক আল্লাহ-র কসম আমি এই স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হিসেবেও দেখি নাই...! যদিও পরে শুনতেছি এই স্বপ্ন পূরণের জন্যও নাকি ঋণ করা হয়েছে...!

হায় কপাল আমাদের...!


ব্রিটিশরা মেরে গেছে সমস্যা নাই...!

ভারতীয় আমলেও মারা খেয়েছি তাতেও সমস্যা নাই...!

পাকিস্তানের অংশ হিসেবে যখন ছিলাম তখনও মারা খেয়েছি তাতেও সমস্যা নাই...!

কিন্তু এখন কেনো...!?

এটাতো ভাই মানা যাচ্ছে না কোনোভাবেই...!

৫২ সনে ভাষার জন্য প্রাণ দিয়ে ভাষাটা পেয়েছি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরে সেই ভাষাটাই আজকে মেডিক্যালের বারান্দার মুমূর্ষু রোগীর মতো অবস্থায়...!

৬৯, ৭০, ৭১ অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার পরে রক্তাক্ত হয়ে লাখো প্রাণ বলিদানের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েও তো হওয়া হলো না স্বাধীন। আসলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু বাঙ্গালী সারাজীবন কলুর বলদের মতোই থাকবে...! যেই লাউ ছিলাম সেই কদুই আছি বাঙ্গালী...!


১৯৭১ গিয়ে আজকে ২০২৩ সাল...!

কিছুদিন আগে পাকিস্তানের ইতিহাসের একটা বইয়ে পড়ে দেখলাম (পিডিএফ) বাংলাদেশকে তারা কেবল এবং কেবলমাত্র তাদের একটা অংশই মনে করে এসেছে যা তারা ৭১ সালে হারিয়ে ফেলেছে মাঝের ভারতীয়দের কুমন্ত্রণায় এর বেশি কিছুই নাহ্...! এতোগুলো মানুষ যে প্রাণ হারালো সাথে এতোগুলো মা-বোন যে ইজ্জত হারালো সেটা কিছুই নাহ্...! যা বর্তমানেও একই দশায়...!


নীলচাষীদের ব্যাপারে পড়েছেন...!? পড়বেনই বা কিভাবে আপনাদের সময়ই তো যায় আজকাল গোলামীতে। লর্ড ক্লাইভরা মারা গেলেও তারা জীবিত আছে এখনোও শাসক নামক গুষ্টিদের মাথায় ভর করে।


দেশপ্রেম না...!?

এই প্রেমের কথায় আমার জীবনে আসা প্রেমগুলোর কথা মনে পড়ে গেলো। প্রথম প্রেমিকা থেকে শেষটা পর্যন্ত প্রত্যেকবারই মনে হয়েছিলো তাকে ছাড়া বাঁচবো না। অথচ দিব্যি বেঁচে আছি🥱। তাদের সবাইও বলেছিলো যে তারাও বাঁচবে না আমাকে ছাড়া তারাও দিব্যি বেঁচে আছে 😂 কেউ দু'তিন বাচ্চার মা। আবার কেউ কয়েকডজনের সাথে লেপ্টে গিয়ে জড়িয়ে থাকা আমার গন্ধ দুর্গন্ধ করে দিয়েছে।


যাই হোক আল্লাহ ঐসব ভুল পাপের কাজের জন্য আমাকেও ক্ষমা করুন এবং তাদেরকেও। নিশ্চয়ই ভুল বুঝে সরে এসে পুনরায় ভুল না করাটাই প্রভুভক্তির পথ...! মালিক হেদায়েতের দিকে অটল রাখুন...!


দ্রব্যমূল্যের দাম ক্রমাগত বাড়ানোর কারণ রিজার্ভ বাড়ানো...!

দাম বাড়লে মানুষের খাইতে কষ্ট। বউ-বাচ্চা, মা-বাপ করবে ঘ্যানঘ্যান। এই ঘ্যানঘ্যান থেকে বাঁচতে নিজে একবেলা খেয়ে কোনোমতে বেঁচে থেকে আরোও কিছু টাকা বাড়িয়ে বাড়িতে পাঠাবে বিদেশে কামলা দিতে যাওয়া মানুষগুলো। যাদের অনেকেই পার্কের বেঞ্চেও ঘুমায়। কিন্তু ঘরে ফোন করে দাঁত কেলিয়ে হাসে আর ফাঁফর মারে বিরিয়ানি কাচ্চির। এইসব মিথ্যা ফাঁফরে কিন্তু একফোঁটাও গুণাহ্ নাই ভাই...!


রিজার্ভ বাড়লেই খুশি সরকার কারণ আবার পকেটে কিংবা বউয়ের ব্লাউজের ভেতরে অথবা ভ্যানিটি ব্যাগে টাকা গুজিয়ে রাখার আরেকটা সুযোগ আসলো কে খুশি হবে না ভাই এই সুযোগে...!?


হায় আমার জাতি...!

দেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু আমরা যেই লাউ সেই কদুই রয়ে গেলাম...!

Comments